Skip to main content

ক্রিপ্টো কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত (How Crypto should be Regulated)

By মার্চ 24, 2022এপ্রিল 30th, 20223 minute read

মনে রাখবেন: এই ব্লগটি লিখেছেন একজন বহিরাগত ব্লগারএই পোস্টের মধ্যে প্রদর্শিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামত সম্পূর্ণরূপে লেখকের

ভারতবর্ষের ক্রিপ্টো বিনিয়োগকারীরা খুবই দ্রুত এটির মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, কিন্তু সম্বন্ধীয় আইন এখনও পিছিয়ে রয়েছে।ক্রিপ্টোতে করপ্রদানের পদ্ধতিকে কঠোর এবং দেশের ক্রিপ্টোর ভবিষ্যতের জন্য নিরুৎসাহিত হিসাবে মনে করা হয়। ভারতবর্ষে কী ক্রিপ্টো বাতিল করার ক্ষেত্রে এতো তারাতারি পদ্দক্ষেপ নেওয়া উচিত? এটির সাথে এগিয়ে যাওয়ার কী অন্য কোনো পথ আছে? এই লেখাটিতে, আমরা অধ্যয়ন করব যে সাধারণত কীভাবে ক্রিপ্টো নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত।

প্রবিধানের প্রয়োজনীয়তা

আসুন প্রথমে আইন প্রণেতাদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে নেওয়া যাক। তারা ক্রিপ্টোকে অর্থ পাচার এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যকলাপের সক্রিয়করণ রূপে দেখেন। ক্রিপ্টো বাজারও কিন্তু ‘পাম্প অ্যান্ড ডাম্প’ স্কিম, ট্রেডিং আয়তনে জালিয়াতি, জালিয়াতি প্রবৃতির জন্য বৃহৎরূপে সংবেদনশীল। কিছু খারাপ ব্যক্তি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির থেকে সম্পূর্ণভাবে তাদের পরিচয় লুকিয়ে বেনামে লেনদেন করে যাচ্ছে। তাছাড়াও, যদি আমাদের অর্থনীতি ক্রমশ ক্রিপ্টোর উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে, এটি নিজে নিজেই অনেক অর্থনৈতিক ঝুঁকির পথ খুলে দেবে।

এই সকল সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতিতে ক্রিপ্টো নিয়ন্ত্রিত হলে এটি ক্ষতির চেয়ে বেশী ভালো ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে। ফিনটেক স্পেসে ক্রিপ্টো-সম্বন্ধীয় প্রযুক্তি আরও অনন্যতার সম্ভবনা বৃদ্ধি করবে।এই সকল অন্যন্যতা সেই সকল দেশের ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে যারা ক্রিপ্টোকে গ্রহণ করেছে।ক্রিপ্টোর বিরুদ্ধে কঠোর পরিমাপের ফলে মানুষজন আইনি পথ অনুসরণ করার ব্যাপারে উৎসাহ হারাবে এবং লেনদেন সম্পন্ন করার জন্য ধূসর এলাকা ও ঝুঁকিপূর্ণ মাধ্যমের দিকে লক্ষপাত করবে। 

এটি কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত?

নীতি প্রণয়ন এবং প্রবিধান জারি করার ক্ষেত্রে যেখানে আমি নিজেই খুব একটা যোগ্য নই, তাও আমি কিছু বিকল্প প্রদান করতে পারি যা বিবেচনা করে দেখা যেতেই পারে:

মানুষজন যে মাধ্যম ব্যবহার করে ক্রিপ্টোতে লেনদেন করে তার সংখ্যা সীমাবদ্ধ করে দেওয়া: যদি ক্রিপ্টো অ্যাক্সেস করার জন্য আপনার শুধুমাত্র একটি ইন্টারনেট সংযোগেরই প্রয়োজন, তবুও কর্তৃপক্ষর থেকে বেনামি থাকার জন্য একজনের প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োজন। সেইজন্যই প্রয়োজনীয়তা সহজতর করার জন্য অধিকাংশ মানুষই এক্সচেঞ্জ ব্যবহারের দিকে যেতে বাধ্য হন। শুধুমাত্র অনুমোদিত ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ক্রিপ্টোর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। এটি অধিকাংশ ক্রিপ্টো গ্রাহকদের এক ছাদের তলায় নিয়ে আসবে যার মাধ্যমে তাদের সহজে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ক্রিপ্টোতে কাজ করার জন্য ভিন্ন লাইসেন্স: ঠিক যেমন আমাদের ব্যাঙ্কিং-এর লাইসেন্স রয়েছে এবং নন-ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্সিয়াল কোম্পানি (NBFC), প্রভৃতির জন্য আলাদা রেজিস্ট্রেশন রয়েছে, ক্রিপ্টোতে কাজ করার জন্যও আমাদের আলাদা লাইসেন্স অথবা আলাদা রেজিস্ট্রেশন থাকতে পারে।এইগুলি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম করবে।

একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন: ব্যাঙ্কিং সেক্টরের নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের কাছে রিসার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI) রয়েছে, সিকিউরিটি বাজার দেখার জন্য সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড (SEBI) রয়েছে, ঠিক সেইভাবেই ক্রিপ্টো স্পেস পরিচালনা করার জন্য আলাদা সংস্থা থাকতে পারে।

ক্রিপ্টো গ্রাহকদের জন্য KYC নিয়ম বাধ্যতামূলক করা: এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা জারি করতে পারে যে, সকল ক্রিপ্টো গ্রাহকদের তাদের পরিচয় যাচাইকরণের জন্য নথি জমা করার প্রয়োজন রয়েছে, যার মধ্যে ব্যাঙ্ক দ্বারা অনুসরণ করা KYC নিয়মের সাথে সামঞ্জস্য থাকবে। ক্রিপ্টো লেনদেনে বেনামি থাকার সমস্যা এটির মাধ্যমে সমাধান করা যাবে।

উচ্চ-মানের অ্যাসেট ক্রয় করার ক্ষেত্রে উচ্চতর পরিচয় যাচাইকরণ বাধ্যতামূলক করা: অর্থ পাচার সাধারণত তিনটি পর্যায়ে হয়ে থাকে: প্লেসমেন্ট, লেয়ারিং, এবং ইন্টিগ্রেশন। উপরোক্ত সমস্ত পরিমাপ ছাড়াও, এখনও এমন খারাপ ব্যক্তি রয়েছে যারা ক্রিপ্টোকে তাদের বেআইনি কার্যকলাপে অর্থপ্রদানের মাধ্যমরূপে ব্যবহার করে। তাদের শেষপর্যন্ত সত্যিকারের উচ্চ-মানের অ্যাসেট ক্রয় করার জন্য লাভের অংশই ব্যবহার করতে হবে। সেইজন্য একটি সীমা নির্ধারণ করতে হবে যার উপরে ক্রয়ের ক্ষেত্রে পরিচয়ের অনেকগুলি যাচাইকরণ বাধ্যতামূলক হতে হবে এবং সেটি ক্রয়ের প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে। 

আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সত্তার সাথে সহযোগিতা: বৃহত্তর-মাপে অর্থ পাচার শুধুমাত্র একটি দেশের ভৌগলিক সীমানাতেই সীমাবদ্ধ নেই।তাছাড়া, এক্সচেঞ্জগুলিরও আন্তর্জাতিক উপস্থিতি থাকতে পারে।সন্দেহজনক লেনদেন সত্যতা যাচাই করার জন্য বিশেষ করে ক্রিপ্টো লেনদেনকে লক্ষ্য করে একটি তথ্য-আদান প্রদানের ব্যবস্থা স্থাপনা করা খুবই যুক্তিসঙ্গত। এটি রাজস্ব ফাঁকির সমস্যার সমধানে বহুদূর পর্যন্ত সাহায্যও করতে পারবে।

ক্রিপ্টো-রিসার্ভ-এর সঞ্চয়: অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার অংশ হিসাবে,  ভারতবর্ষ বড় অর্থের বৈদেশিক মুদ্রার রিসার্ভ সংগ্রহ করেছে। একইভাবে এটি ক্রিপ্টো রিসার্ভ ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারবে। 

উপসংহার

ক্রিপ্টো স্পেসে চতুর্থ আইন নিয়ে আসা কোনোমতেই সহজ অথবা সরল পদক্ষেপ নয়। যদিও, ভারতবর্ষের যুবদের মধ্যে ক্রিপ্টোর জনপ্রিয়তার বৃদ্ধির সাথে সাথে, আইন নিয়ে আসা এবং বিনিয়োগ ও অনন্যতার সুবিধা প্রদান করবে এমন একটি যুক্তিসঙ্গত করের নীতি নিয়ে আসা উপকারী সিদ্ধান্ত হবে।এই সুবধাটি করের জন্য সরকারের নতুন পথের আকারেও হতে পারে। 

দাবিত্যাগ: ক্রিপ্টোকারেন্সি আইনি দরপত্র নয় এবং বর্তমানে এটি অনিয়ন্ত্রিত। আপনি অবশ্যই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ট্রেডিং করার পূর্বে অনুগ্রহ করে যথেষ্ট ঝুঁকির মূল্যায়ণ করেছেন কারণ এটি প্রায়শই উচ্চ মূল্যের অস্থিরতার বিষয়। এই বিভাগে প্রদত্ত তথ্য কোনো বিনিয়োগের উপদেশ অথবা WazirX-এর নিজস্ব উপদেশ নয়। WazirX কোনো অগ্রিম সূচনা ছাড়াই যেকোনো কারণের জন্য এবং যেকোনো সময়ে এই ব্লগ পোস্টটি সংশোধন এবং পরিবর্তন করার অধিকার রাখে।

Leave a Reply